ঈদের তৃতীয় দিন গাজীপুরের বিভিন্ন পার্কে দর্শনার্থীদের ভিড় জমেছে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়সী মানুষের ভিড়ও ছিল। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, ন্যাশনাল পার্কসহ বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠা পার্ক ও পিকনিক স্পটগুলোতেও দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

সোমবার (২৪ এপ্রিল)) দুপুরের দিকে ভিড় ছাপিয়ে অনেকটা দর্শনার্থীদের সমাবেশে রূপ নেয়।

গাজীপুরের রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্টের ব্যবস্থাপক আহমেদ জানান, গাজীপুর জেলায় কমপক্ষে দেড়’শ বেসরকারি রিসোর্ট ও পার্ক রয়েছে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে সাধারণ দর্শনার্থীদের ভিড় জমে এসব জায়গায়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে অন্যান্যবারের তুলনায় ভিড় কিছুটা কম।

ন্যাশনাল পার্কে ঘুরতে আসা ঢাকা মিরপুরের ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন হোসেন ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “কয়েক বছর আগেও গাজীপুরের ন্যাশনাল পার্কের ব্যাপারে নানা কথা পড়েছি-শুনেছি। সম্প্রতি এর পরিবেশের অনেকটা উন্নতি হয়েছ বলেও জানতে পেরেছি। আর সে কারণেই এবার পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছি।”

তিনি আরও বলেন, “এখানে পুরোনো সব গাছের নিচে সবুজের শীতল ছায়া অতুলনীয়। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা কিছু জলাধার আর শালবন বেষ্টিত রাজেন্দ্রপুর ন্যাশনাল পার্কে সুউচ্চ কয়েকটা টাওয়ার রয়েছে। এসবের উপরে উঠে বিস্তীর্ণ শালবনের উপরিভাগ দেখে মনে হয় প্রকৃতির সবুজ আর আকাশের মাঝে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।”

অপর দর্শনার্থী সামসুদ্দীন হাওলাদার বলেন, “ন্যাশনাল পার্কের ভেতরে ভাড়ায় ঘোড়ার গাড়ি পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শালবনের কিছু অংশ ঘুরে দেখে মন জুড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার কাছে সবুজের সমারোহ যেন এক অন্য জগত।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে আসেন সানোয়ার হোসেন। তিনি টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকায় একটি কারখানার প্রশাসনিক নির্বাহী।

তিনি বলেন, “সোমবার ঘোরার জন্য দিনটির আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে ছিল। সাফারি পার্কের প্রাণীজগৎ কোর সাফারি, হাতিশালা, কুমির বেষ্টনী, বিচিত্র মাছের আনাগোনা, জলহস্তী, অজগর, রঙ বেরঙের পাখিসহ বিলুপ্ত প্রায় কয়েক জাতের প্রাণী দেখে মুগ্ধ হয়েছি।”

দর্শনার্থী সোনিয়া রিংকী বলেন, “বসন্ত শেষের পরও কিছু গাছে নতুন পাতা পার্কের প্রকৃতিকে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে। তবে প্রাণী বৈচিত্র্যের প্রতি কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি যত্নবান হওয়া উচিত। কিছু বেষ্টনীতে বৈচিত্র্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য সংস্কার করা প্রয়োজন।”

শিশু দর্শনার্থী সুমাইয়া জাহান টুম্পার ভাষ্য, “অনেক বড় আয়তনের সাফারি পার্ক ঘুরে তার ভালো লেগেছে। নানা ধরণের পাখি ও ময়ূর দেখে তার বেশি ভালো লেগেছে।”

পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “ঈদ উপলক্ষে পার্কের পরিচ্ছন্নতার আয়তন বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তার দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তিগত নিরাপত্তার পাশাপাশি পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মঘণ্টা বাড়ানো এবং দায়িত্ব বণ্টনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে দর্শনার্থীরা পার্ক পরিদর্শনের জন্য অনুকূল পরিবেশের নিশ্চয়তা পাচ্ছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *